“মধ্য নগর”- এক আশ্চর্য্য জনপদ

Spread the love

“মধ্য নগর”- এক আশ্চর্য্য জনপদ। যতোবার গিয়েছি আমার কাছে বড় রহস্যময় এক অঞ্চল মনে হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে সুনামগঞ্জ জেলায় কিন্তু সুনামগঞ্জ থেকেও বহুদূর। কদম ফেললেই নেত্রকোণা জেলা শুরু। উত্তরে মেঘালয়ের পশ্চিম খাসি হিল শেষ হয়ে গারো পাহাড়ের শুরু আর দক্ষিন,পূর্ব, পশ্চিম তিনদিক জুড়ে তো আদিগন্ত হাওর। এখানে এলে মনে হয় হাওর আসলেই সায়র/ সাগরের অপভ্রংশ।

বর্ষায় উত্তাল হাওর পাড়ি দেয়া আর বর্ষাশেষে হোন্ডায় চড়ে ধানক্ষেত, বুনোপথ ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা যাত্রা- এছাড়া যাতায়াতের সুযোগ নেই এই একুশ শতকেও।।

এই দুর্গম অঞ্চল তার ভৌগোলিক কারনেই হয়তো আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাসে সমৃদ্ধ।এই অঞ্চল টং আন্দোলনে উত্তাল হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে ছিলো গেরিলা অপারেশনের সুবিধাজনক ঘাঁটি আর বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর প্রতিরোধ যুদ্ধেরও তীর্থ ছিলো এই সীমান্ত অঞ্চল। বাঙালীদের পাশাপাশি হাজং ও গারো সম্প্রদায়ের উজ্জ্বল উপস্থিতি এই অঞ্চলকে করেছে বর্ণিল, সাথে হাওর সংস্কৃতির সুরেলা সমৃদ্ধি।

ময়মনসিংহের বিখ্যাত গৌরীপুর জমিদারীর অংশ ছিলো এই অঞ্চল। প্রত্যন্ত এই অঞ্চলে সেই ১৯২০ সালে জমিদার ব্রজেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী তাঁর মায়ের নামে বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন, পরে তা কলেজেও উন্নীত হয়। “বিশ্বেশ্বরী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ”।

এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্রদের অনেকেই নিজ নিজ পেশায় সুপ্রতিষ্ঠিত। তাঁদের কয়েকজনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে স্থাপিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। যে অঞ্চলের মানুষেরা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে সশস্ত্র হয়েছিলেন সেখানে এমন ম্যুরাল তো হওয়াই উচিত। এতো সুন্দর ম্যুরাল ঢাকাতেও খুব একটা নেই।

মধ্যনগরের মানুষদের, এই ম্যুরালের উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top